দেশ 

Sedition Law paused: প্রধান বিচারপতির ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত কেন্দ্র পুনর্বিবেচনা না করা পর্যন্ত রাষ্ট্রদ্রোহ আইন স্থগিত, ৭৫ বছর পর দেশের নাগরিকরা আবার নতুন করে স্বাধীনতার স্বাদ পেল, ইতিহাসে অমর হয়ে থাকবেন বিচারপতি এনভি রামান্না

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সেখ ইবাদুল ইসলাম : স্বাধীনতা ৭৫ বছরের ইতিহাসে প্রথম রাষ্ট্রদোহ আইনের উপর স্থগিতাদেশ দিল দেশের সর্বোচ্চ আদালত । স্বাধীনোত্তর ভারতের ইতিহাসে অমর হয়ে থাকবেন আজকের দেশের প্রধান বিচারপতি এন ভি রামান্না । দেশের মানুষ যখন বিচারব্যবস্থার প্রতি হতাশ পড়ছিল ঠিক সেই সময় প্রধান বিচারপতি বার্তা দেশের মানুষের স্বাধীনতা , নাগরিক অধিকারকে সুরক্ষিত রাখতে তিনি বদ্ধপরিকর । আসলে এই রাষ্ট্রদোহ আইনটি ব্রিটিশ সরকার চালু করেছিল । এদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামীদেরকে শাস্তি দেওয়ার লক্ষ্যে এই আইন চালু করেছিল উপনিবেশিক শাসকরা । কিন্ত দুঃখের হলেও সত্য ৭৫ বছর ধরে এই আইন স্বাধীন দেশে কার্যকর ছিল । কংগ্রেস দল গণতন্ত্রের কথা বললেও  এই আইন তুলে দেয়নি । তারাও এই আইনকে কাজে লাগিয়ে অনেক গণতান্ত্রিক আন্দোলনের কর্মীদের জেলে পুরেছে । আবার  মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর সবচেয়ে বেশি অপপ্রয়োগ হয়েছে এই আইন ।

তাই সুপ্রিম কোর্টের বর্তমান প্রধান বিচারপতি তাঁর মেয়াদ শেষ হওয়ার কয়েক মাস আগে রাষ্ট্রদোহ আইন বা দেশদ্রোহ আইন স্থগিত করে দিয়ে যুগান্তর সৃষ্টি করলেন । ভারতের মতো বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশের প্রধান বিচারপতির এই সিদ্ধান্ত সমগ্র দেশজুড়ে আলোড়ন পড়েছে । প্রধান বিচারপতিকে সমগ্র দেশের মানুষ অভিনন্দন ও কুর্ণিশ জানাচ্ছে সাহসী সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য । কারণ বেশ কয়েক মাস ধরে রাষ্ট্রদোহ আইন নিয়ে কেন্দ্রের অবস্থান জানতে চাইছিলেন প্রধান বিচারপতি । কিন্ত সুপ্রিম কোর্টের আবেদনে কোনো উত্তর দেয়নি কেন্দ্র । তাই বাধ্য হয়ে প্রধান বিচারপতির ডিভিসন বেঞ্চ জানিয়ে দিল, কেন্দ্রীয় সরকার যতদিন না ব্রিটিশ আমলে তৈরি আইনের পুনর্বিবেচনা করছে, তত দিন পর্যন্ত এই আইন প্রয়োগ স্থগিত থাকবে। শীর্ষ আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, এই আইনে আর কোনও গ্রেফতার হবে না। ইতিমধ্যেই এই আইন প্রয়োগ করে যে সমস্ত মামলা চলছে, তা স্থগিত হয়ে যাবে। এই আইনের বলে বন্দিরা জামিনের আবেদন করতে পারবেন।

Advertisement

মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এন ভি রামান্না বেঞ্চ কেন্দ্রের কাছে জানতে চায়, যত দিন রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের পুনর্বিবেচনা চলছে, তত দিন কি এই আইনের আওতায় রুজু হওয়া মামলা স্থগিত রাখা যায়? পাশাপাশি আদালত কেন্দ্রের কাছে জানতে চায়, কেন্দ্রীয় সরকার কি রাজ্যগুলোকে এই আইন প্রয়োগ করে কোনও পদক্ষেপ না করার কথা বলতে পারে? বুধবার কেন্দ্রীয় সরকার সুপ্রিম কোর্টকে জানায়, তারা রাজ্যগুলোকে বলতে পারে, পুলিশ সুপার বা তার উঁচু পদমর্যাদার আধিকারিকরাই যেন কেবল রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করতে পারেন। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট বুধবার সাফ জানিয়ে দেয়, যত দিন না রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের পুনর্বিবেচনা শেষ করছে কেন্দ্র, তত দিন স্থগিত থাকবে এই আইনের প্রয়োগ।

একই সঙ্গে সর্বোচ্চ আদালত জানায়, নতুন করে এই আইন প্রয়োগ করে কাউকে গ্রেফতার করা যাবে না। এই আইনে এখন যে সমস্ত মামলা চলছে, তা স্থগিত হয়ে যাবে। এবং এই আইন প্রয়োগ করে গ্রেফতার করা ব্যক্তিরা জামিনের আবেদন করতে পারবেন। তা সত্ত্বেও যদি এই আইনে কারও বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়, তাহলে তিনি আদালতের দ্বারস্থ হতে পারবেন।
স্পষ্ট রায় দিলেন দেশের প্রধান বিচারপতি । কোনো ভাবে আর ব্রিটিশের তৈরি এই আইন বলবৎ করা যাবে না । স্বাধীনতার ৭৫ বছর ধরে কেন এই আইন এখনও চালু রেখেছিল কেন্দ্র সেই জবাব চাওয়ার সময় এসেছে । এটা অস্বীকার করার উপায় ইতিমধ্যেই এই আইনকে সামনে রেখে সরকার বিরোধী আন্দোলনের কর্মীদের এমনকি সাধারণ নাগরিকদের বছরের পর বছর জেলে বন্দী রাখা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের এই স্পষ্ট নির্দেশের পর এদেশের সাধারণ নাগরিক আক্ষরিক অর্থে স্বাধীনতার স্বাদ পেল বলা যেতে পারে ।

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ